আপনি এখন যেই যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছেন, তা হলো ঈশ্বরের বাক্যের মধ্যে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যাত্রা। আমরা একসাথে এই যাত্রায় এগিয়ে চলবো এবং ঈশ্বরের বাক্যের অন্যতম মহান বিষয় — ঈশ্বরের পরিত্রাণের পরিকল্পনা কি?— তা অন্বেষণ করবো।
যদিও এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবুও দুঃখজনকভাবে সত্য যে, বর্তমান ধর্মীয় জগতে অনেকেই এটি ভুলভাবে বোঝে। শয়তান কোনো না কোন ভাবে বহু মানুষের কাছ থেকে এই সত্যটি লুকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে। আজকের দিনে খুব অল্প কিছু মণ্ডলীই মুক্তি বা পরিত্রাণের পরিকল্পনা সম্পর্কে সত্য শিক্ষা দেয়। এই বাস্তবতাটি একদিকে চিন্তার উদ্রেককারী, অন্যদিকে বিস্ময়কর— তাই এটিই আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে এবং আরও গভীরভাবে বিষয়টি অনুসন্ধান করতে আমাদের অনুপ্রাণিত করে।
আজ আমরা যে বিষয়ে আলোচনা করছি, তা ঈশ্বরের বাক্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এটি সেই প্রশ্ন যা পঞ্চাশত্তমীর দিনে লোকেরা চিৎকার করে বলেছিল যা প্রেরিত ২:৩৭-এ লেখা আছে: “হে ভ্রাতাগণ, আমরা কী করিব?” এটি একই প্রশ্ন যা প্রেরিত ১৬ অধ্যায়ে এক কারারক্ষক জিজ্ঞাসা করে, যখন সে প্রস্তুতিহীন অনন্তকালের কিনারা থেকে চিরন্তন জীবনের খোঁজে আসে এবং বলে: “মহাশয়েরা, আমি পরিত্রাণের জন্য কি করিব?” (প্রেরিত ১৬:৩০)।
ঈশ্বরের বাক্য আমাদের সেই অনন্ত প্রশ্নের উত্তর স্পষ্টভাবে ও বিশদভাবে প্রদান করে, এবং আমরা দৃঢ় সংকল্প করেছি যে, এখানে আমরা সেই উত্তর খুঁজে বের করব।
এই অনুসন্ধানের যাত্রায় আমাদের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ!
আমরা আমাদের যাত্রা শুরু করছি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ প্রশ্ন দিয়ে:
“আমাকে কি করতে হবে যাতে আমি রক্ষা পেতে পারি?”
সংক্ষেপে সেই প্রশ্নের উত্তর হলো: আমাদের যীশুর রক্তের কাছে পৌঁছাতে হবে।
আমাদের জন্য যীশুর রক্তে পৌঁছানো কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
বাইবেল আমাদের এটি দেখায় প্রকাশিত বাক্য পুস্তকের সপ্তম অধ্যায়ে, যেখানে প্রেরীত যোহন পবিত্র আত্মার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে স্বর্গের দ্বারদেশে যান। এবং তিনি যা দেখেন তা বিস্ময়কর!! তিনি একটি বিশাল সংখ্যক জনতাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন- তাহারা সিংহাসনের সম্মুখে ও মেষশাবকের সম্মুখে দাঁড়াইয়া আছে; তাহারা শুক্লবস্ত্র পরিহিত, ও তাহাদের হস্তে খর্জুর-পত্র; -(প্রকাশিত বাক্য ৭:৯ )।
তারপর এক প্রাচীন যোহনের দিকে ফিরে জিজ্ঞাসা করেন, “শুক্লবস্ত্র পরিহিত এই লোকেরা কে, ও কোথা হইতে আসিল? …?” (প্রকাশিত বাক্য ৭:১৩)।
যোহন এই প্রশ্নে বিস্মিত হন এবং উত্তর দেন, “হে আমার প্রভু, তাহা আপনিই জানেন”
অতএব, বয়স্ক ব্যক্তি নিজেই তাঁর প্রশ্নের উত্তর দেন: “ইহারা সেই লোক, যাহারা সেই মহাক্লেশের মধ্য হইতে আসিয়াছে, এবং মেষশাবকের রক্তে আপন আপন বস্ত্র ধৌত করিয়াছে, ও শুক্লবর্ণ করিয়াছে।” (প্রকাশিত বাক্য ৭:১৪) আমাদের এই সত্যটি উপেক্ষা করার কোন সুযোগ নেই:
যারা স্বর্গে ঈশ্বরের সিংহাসনের চারপাশে জড়ো হয়েছে এবং ঈশ্বরের মেষশাবকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে—তারা সেইসব মানুষ, যাদের পোশাক যীশু খ্রীষ্টের রক্তে ধুয়ে সাদা করা হয়েছে!
এই কথায় এটিই পরিষ্কার হয় যে—শুধুমাত্র যীশুর রক্তে ধুয়ে পাপমুক্ত হওয়াই স্বর্গে প্রবেশের একমাত্র পথ।
এই শক্তিশালী ভাবনার আলোকে আমরা বুঝতে পারি যে, আমাদের অবশ্যই আমাদের সামনে থাকা প্রশ্নের সঠিক উত্তর খুঁজে বের করতে হবে।
আমাদের কী করতে হবে যেন নিশ্চিত হতে পারি যে আমাদের পোশাক কি যীশুর রক্তে ধুয়ে সাদা হয়েছে?
1
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে গীতিকাররা যীশুর রক্তের আত্মা-পরিষ্কারকারী শক্তিকে সুন্দর সুর ও সংগীতে মহিমান্বিত করে তুলেছেন।
১৮৭৮ সালে এলিশা হফম্যান অসাধারণ একটি গান রচনা করেন: “Are You Washed in the Blood?” (আপনি কি নিজেকে যীশুর রক্তে ধুয়েছেন?) আপনি এই মহান প্রশ্নগুলোর কথাগুলোর বিষয় কি ভাবছেন, যেগুলো দিয়ে এই মহান গানটি শুরু হয়?
আপনি কি কখনও নিজেকে পরিশুদ্ধির জন্য যীশুর রক্তের শক্তির কাছে গিয়েছেন? আপনি কি প্রকাশিত বাক্য ৭ : ১৪খ এর মত মেষশাবকের রক্তে ধৌত হয়েছেন ? এই মুহূর্তে কি আপনি সম্পূর্ণরূপে তাঁর অনুগ্রহে বিশ্বাস রাখছেন? আপনি কি মেষশাবকের রক্তে ধৌত হয়েছেন ?
কি অপূর্ব !! আত্মাকে স্পর্শ করার মত প্রশ্ন!
১৮৯৯ সালে, লুইস জোন্স একটি পরিচিত ও শক্তিশালী ভজনসঙ্গীতে ঠিক ততটাই হৃদয়স্পর্শী কিছু প্রশ্ন উপস্থাপন করেন:
আপনি কি চান পাপের ভার থেকে মুক্তি পেতে?
রক্তে আছে শক্তি, রক্তে আছে শক্তি;
আপনি কি চাইবেন মন্দের উপর বিজয় লাভ করতে?
রক্তে আছে আশ্চর্য শক্তি।
প্রেরীত যোহন, যিনি পাটন দ্বীপ থেকে লিখছিলেন, তিনিও সেই শক্তিকে ভালোভাবেই জানতেন:
তিনি জানতেন যীশুর রক্তের ক্ষমতা, যা পাপীকে মুক্ত করে, হৃদয়কে পরিবর্তন করে এবং মানুষকে ঈশ্বরের সিংহাসনের সামনে দাঁড়াবার উপযুক্ত করে তোলে।
তাই তিনি বলেন— ”যিনি আমাদিগকে প্রেম করেন, ও নিজ রক্তে আমাদের পাপ হইতে আমাদিগকে মুক্ত করিয়াছেন” (প্রকাশিত বাক্য ১:৫)।
পৌল—ইফিষীয় মন্ডলীর প্রাচীনদের উদ্দেশ্যে তাঁর বিদায় ভাষণে—তাদের স্মরণ করিয়ে দেন যেন তারা প্রভুর মন্ডলীর যত্ন নেন, যে মন্ডলীকে খ্রীষ্ট তাঁর নিজ রক্ত দিয়ে ক্রয় করেছেন। ”সেই মণ্ডলীকে পালন কর, যাহাকে তিনি নিজ রক্ত দ্বারা ক্রয় করিয়াছেন ” (প্রেরীত ২০:২৮)।
আবার শুনুন যীশুর বন্ধু পিতরের কথা:
তোমরা ত জান, তোমাদের পিতৃপুরুষগণের সমর্পিত অলীক আচার-ব্যবহার হইতে তোমরা ক্ষয়ণীয় বস্তু দ্বারা, রৌপ্য বা স্বর্ণ দ্বারা, মুক্ত হও নাই, 19কিন্তু নির্দোষ ও নিষ্কলঙ্ক মেষশাবকস্বরূপ খ্রীষ্টের বহুমূল্য রক্ত দ্বারা মুক্ত হইয়াছ। -১ পিতর ১:১৮-১৯
হ্যাঁ, “মেষশাবকের রক্তে” আছে মুক্তিদানকারী, "অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন শক্তি!" যা পাপীকে পাপ থেকে মুক্ত করে,
2
আজ আমরা বুঝতে পারি যে, যিশু খ্রিষ্টের রক্তের মধ্যে এমন এক শক্তি রয়েছে যা হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ কখনো অর্জন করতে পারেনি! চার হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে, ঈশ্বর কর্তৃক নিযুক্ত কোটি কোটি পশুবলি সত্ত্বেও—মানুষ তার পাপ থেকে মুক্তির জন্য খুঁজে ফিরেছে এবং আকাঙ্ক্ষা করেছে।
এই অনুসন্ধান শুরু হয়েছিল সেই প্রাচীন বাগানে, যখন ঈশ্বর মানুষকে একটি আবরণ প্রদান করেছিলেন, যা ছিল কেবল সাময়িকভাবে যথেষ্ট।
ঈশ্বর প্রবাহিত করেছিলেন...
বিশ্বের প্রথম রক্ত যেটা আদম ও হবাকে পশুর চামড়া দিয়ে ঢেকে দিয়েছিল (আদিপুস্তক ৩:২১)।
সেই রক্তপাত মানুষের নগ্নতাকে ঢেকে দিয়েছিল, কিন্তু তার পাপ ঢাকতে পারেনি।
পুরাতন নিয়মে ঈশ্বর রক্তের বলিদানগুলি পাপের জন্য সাময়িক আবরণ হিসেবে নির্ধারণ করেছিলেন।
কিন্তু সেই বলিদানগুলো, যেগুলো “বছর বছর অবিরত” প্রদান করা হতো (ইব্রীয় ১০:১), যা মানুষের পাপ শুদ্ধ করতে পারেনি।
যদি শুদ্ধ করতে পারত, সেগুলো দেওয়া বন্ধ হয়ে যেত (পদ ২)।
কারণ শাস্ত্র বলে- কিন্তু ঐ সকল যজ্ঞে বৎসর বৎসর পুনর্বার পাপ স্মরণ করা হয়। 4 কারণ বৃষের কি ছাগের রক্ত যে পাপ হরণ করিবে, ইহা হইতেই পারে না। (ইব্রীয় ১০:৩-৪)।
এই সমস্যার সমাধান সরাসরি যীশু খ্রীষ্টের দিকে নির্দেশ করে, যাকে বারবার বলিকৃত হতে হয়নি।
কারণ ইব্রীয় পুস্তকের লেখক যীশুকে নির্দেশ করে বলেন- কিন্তু ইনি পাপার্থক একই যজ্ঞ চিরকালের জন্য উৎসর্গ করিয়া ঈশ্বরের দক্ষিণে উপবিষ্ট হইলেন, ---------------- কারণ যাহারা পবিত্রীকৃত হয়, তাহাদিগকে তিনি একই নৈবেদ্য দ্বারা চিরকালের জন্য সিদ্ধ করিয়াছেন। (ইব্রীয় ১০:১২ ও১৪)
কারণ যীশু খ্রীস্টের মাধ্যমে—তাঁর আত্মাকে শুদ্ধকারী রক্তের মাধ্যমে—আমাদের আছে একমাত্র মুক্তির উপায়। কারণ ঈশ্বর বলেন- “ তাহাদের পাপ ও অধর্ম সকল আর কখনও স্মরণে আনিব না।” (ইব্রীয় ১০:১৭ ও যিরমিয় ৩১:৩৪)
আহ, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষ ঈশ্বরের সঙ্গে সঠিক সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করতে করতে অসংখ্য রক্তনদী প্রবাহিত করেছে!
কিন্তু লক্ষ লক্ষ পশুবলির এবং সেই রক্তের নদীপ্রবাহের পরেও...
3
মানুষকে মুক্তি দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল না। প্রতি বছর সেই পাপগুলো পুনরায় স্মরণ করা হতো।
আজ আপনি কি আনন্দিত নন যে, আমাদের অতীতের পাপগুলো প্রতি বছর আর স্মরণ করা হবে না—যখন আমরা মেষশাবকের আত্মা-পরিষ্কারকারী রক্তের সংস্পর্শে আসি, তখন আর সেই পাপের মুখোমুখি হতে হবে না?
না, এখন নয়। আর কখনোই নয়!
কালভ্যারির সেই ঘটনার কারণে আমরা কতই না সুন্দর একটি আশীর্বাদ পেয়েছি!
তাহলে আমরা মুখ্য প্রশ্নের কাছে পৌঁছলাম: আমরা কীভাবে সেই রক্তের সংস্পর্শে আসব?
বাইবেলের উত্তর এবং আমাদের প্রতিক্রিয়া নির্ধারণ করবে আমরা ঈশ্বরের সিংহাসনের চারপাশে সাদা পোষাক পরে হাঁটব কি না!
এমনটাই গুরুত্বপূর্ণ এই অনুসন্ধান!
স্পষ্টতই, বিষয়টি মানুষের হাতে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ; তাই, চলুন উত্তরের জন্য ঈশ্বরের বাক্যের কাছে যাই।
চলুন শুরু করি খ্রীষ্টের স্বর্গারোহণের পরবর্তীতে সময়ের প্রথম সুসমাচার প্রচারের ঘটনা দিয়ে, যা প্রেরিতদের কার্য বিবরণীর দ্বিতীয় অধ্যায়ে রয়েছে। তার আগে আমরা একটু দেখে আসব প্রভু স্বগারোহণের পূর্বে শিষ্যদের কি বলেছিল। তিনি বলেছিলেন -
আর দেখ, আমার পিতা যাহা প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, তাহা আমি তোমাদের নিকটে প্রেরণ করিতেছি; কিন্তু যে পর্যন্ত ঊর্ধ্ব হইতে শক্তি পরিহিত না হও, সেই পর্যন্ত তোমরা এই নগরে অবস্থিতি কর। (লুক ২৪:৪৯)।
আর পঞ্চাশত্তমীর দিন যখন প্রত্যেক জাতির মানুষ যিরুশালেমে একত্রিত হয়, এবং একটি কুটিরের উপরে যখণ প্রেরীতেরাসহ ১২০জন একত্রে উপস্থিত হয়ে প্রার্থনা করছিল ঠিক তখনই লুক ২৪:৪৯-এর প্রভুর কথা অনুযায়ী তাদের উপরে প্রচন্ড বায়ুর শব্দবেগে অগ্নিবৎ জিহ্বা তাদের উপরে নেমে আসে এবং সেই বায়ুর শব্দ যিরুশালেমে অবস্থিত লোকসমূহ শুনতে পেয়ে প্রেরীতেরা যেখানে ছিল সেখানে ছুটে আসে এবং পিতর প্রথম বারের মত সুসমাচার প্রচার করার জন্য দাঁড়ান।
-প্রেরীত ২:১-৫ ও ১৪
পিতর ঐদিন সেই যিহুদীদের উদ্দেশ্যে আগুন ঝরানো, ও আত্মা স্পর্শ করার মত একটি প্রচার করেন, যা তাদেরকে সতর্ক করে যে তারা আমাদের প্রভু যীশুকে ক্রূশবিদ্ধ করার জন্য অপরাধী! পিতর বলেন-
অতএব ইস্রায়েলের সমস্ত কুল নিশ্চয় জ্ঞাত হউক যে, যাঁহাকে তোমরা ক্রূশে দিয়াছিলে, সেই যীশুকেই ঈশ্বর প্রভু ও খ্রীষ্ট উভয়ই করিয়াছেন। -প্রেরীত ২:৩৬
পিতরের এই সুসমাচারের প্রতিক্রিয়া ছিল অভূতপূর্ব! পিতরের সুসমাচারের ফলে হাজার হাজার জনতার হৃদয়ে গভীরভাবে আঘাত করে, এবং তারা পিতর ও বাকি প্রেরীতদের চিৎকার করে বলে, ভ্রাতৃগণ, আমরা কি করিব?
4
এটাই প্রথমবার সুসমাচারের পরিকল্পনার অধীনে আমরা এই জীবন-পরিবর্তনকারী প্রশ্নটির একটি বিবরণ পাই: পরিত্রাণের জন্য কি করা প্রয়োজন!! এটি সত্তিই একটি গুরুত্তপূর্ণ মুহুর্ত্ত হতে যাচ্ছে!!
তাঁদের যীশুর রক্তে পৌঁছানোর জন্য কী করতে হবে? এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে পিতর বলেন: মন ফিরাও, এবং তোমরা প্রত্যেক জন তোমাদের পাপমোচনের নিমিত্ত যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তাইজিত হও; তাহা হইলে পবিত্র আত্মারূপ দান প্রাপ্ত হইবে। (প্রেরীত ২:৩৮)। এটির সাথে যীশুর স্বগারোহনের পূর্বে প্রেরীতদের উদ্দ্যেশে লুক ২৪:৪৭-এ বলা কথার সাথে মিলে যায় কারণ তিনি বলেছিলেন---আর তাঁহার নামে পাপমোচনার্থক মন পরিবর্তনের কথা সর্বজাতির কাছে প্রচারিত হইবে- যিরূশালেম হইতে আরম্ভ করা হইবে। ---আর এই ঘটনাটি ছিল যিরুশালেমের ঘটনা যেখানে সর্বজাতীর লোকেরা উপস্থিত ছিল এবং পিতর তাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করছেন - শেষে বলছেন-মন ফিরাও, এবং তোমরা প্রত্যেক জন তোমাদের পাপমোচনের নিমিত্ত যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তাইজিত হও; কি আশ্চর্য মিল !!
"আমি জানি না পুরো বাইবেলে এমন আর কোনো ”পদ “ আছে কিনা যা এর চেয়ে বেশি শক্তিশালী:"
* মন ফিরাও এবং
* তোমরা প্রত্যেকে জন
* পাপ মোচণের নিমিত্ত
* যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তাইজিত হও
* তাহা হইলে পবিত্র আত্মারুপ দানপ্রাপ্ত হইবে।
১ ও ৪ নং পয়েন্ট দুটো হলো এমন কর্ম যা হলো প্রভু যীশুর আদেশ - মন পরিবর্তন কর ও বাপ্তাইজিত হও (লুক ১৩:৩,৫ মথি ২৮:১৯) কেন? কারণ এতে তোমার পাপ মুছে যাবে ও পবিত্র আত্মারূপ দান প্রাপ্ত হইবে।
অনুপ্রাণিত প্রেরিতের মতে, পাপের ক্ষমা ও পবিত্র আত্মার দান—উভয়ই বাপ্তিস্মের পরে আসে, বাপ্তিস্মের আগে নয়। কিন্তু যদি কেউ পাপ থেকে ফিরে মন ফেরায় এবং বাপ্তিস্ম গ্রহণ করে পাপ ধুয়ে ফেলতে চায়, তবে সে যীশু খ্রিষ্টের রক্তের সঙ্গে মিলিত হবে!
চলুন আমরা আরেকটি দৃশ্যে যাই—তার্স -এর শৌলের মন পরিবর্তনের ঘটনার দিকে লক্ষ্য রাখি—যাতে আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে আমরা ধর্মগ্রন্থের সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে চলছি কিনা।
শৌল ( যিনি পরে পৌল নামে পরিচিত হন) খ্রীষ্টিয়ানদের ধরতে দামেস্ক শহরের পথে যাচ্ছিলেন। সেই পথে তিনি হঠাৎ করে একটি উজ্জ্বল আলো দেখলেন এবং প্রভু যিশুর সঙ্গে মুখোমুখি হলেন। যীশু যখন নিজের পরিচয় দিলেন, তখন শৌল ভীষণ ভয় পেয়ে কাঁপতে কাঁপতে বললেন:
“প্রভু, আপনি আমাকে কী করতে বলছেন?” (প্রেরিত ৯:৬)
5
এই প্রশ্নটি কিছু মানুষের কাছে অদ্ভূত মনে হতে পারে, যারা মনে করেন, শৌল ইতোমধ্যেই যা কিছু করার প্রয়োজন ছিল তা করে ফেলেছেন।
* তিনি যীশুর "দর্শণ” পেয়েছেন—একটি আলো দেখেছেন (প্রেরিত ৯:৩)।
* তিনি যীশুকে দেখেন এবং ”প্রভু” বলে স্বীকার করেন (প্রেরিত ৯:৪-৫);
* শৌল যীশুতে বিশ্বাস করেন এবং প্রভু বলে ডাকেন (প্রেরীত ৯:৫
• শেষ পর্যন্ত, তিনি সেই মহান প্রশ্নটি করেন: “প্রভু, আমি কি করিব?” — যা তার মন ফিরানোকে নির্দেশ করে (প্রেরিত ২২:১০)।
যদি শৌল আজকের কোনো মন্ডলীতে প্রবেশ করে তার অভিজ্ঞতার কথা শোনাতেন, তবে নিঃসন্দেহে অধিকাংশ মানুষই তার হাত ধরে বলত, “স্বাগতম ভাই শৌল; আপনি তো একজন নতুনজন্মপ্রাপ্ত খ্রীষ্টিয়ান!”
কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার হলো, পবিত্র আত্মা তখনও প্রকাশ করেনি শৌল নতুনজন্ম প্রাপ্ত হয়েছেন। আসলে, বাইবেল দেখায় যে তার পাপগুলো তখনও ধুয়ে ফেলা হয়নি!
আমাদের অনুসন্ধানে এটি একটি গুরত্বপূর্ণ আবিষ্কার!
শৌল প্রভুর উপর বিশ্বাস করে, প্রভুর নাম স্বীকার করে, এমনকি তিন দিন ধরে প্রার্থনা করেও—পাপ থেকে মুক্ত হতে পারেননি।
আমরা জানি যে এই কাজগুলো নিজেরাই পাপ দূর করতে পারে না, কারণ যীশু শৌলকে বলেন: কিন্তু উঠ, নগরে প্রবেশ কর, তোমাকে কি করিতে হইবে, তাহা বলা যাইবে (প্রেরীত ৯:৬)।এই কথা দ্বারা এটা স্পষ্ট বোঝা যায় যে শৌলের তখনও কিছু করার বাকী ছিল।
যখন সে দামেস্কে পৌঁছায়, তখন ঈশ্বরের প্রেরিত একজন প্রচারক, অননীয়, শৌলের ঘরে প্রবেশ করেন—যেখানে শৌল হাঁটু গেড়ে প্রার্থনা করছিল (প্রেরীত ৯:১২ক)—আর তিনি বলেন: আর এখন কেন বিলম্ব করিতেছ? উঠ, তাঁহার নামে ডাকিয়া বাপ্তাইজিত হও, ও তোমার পাপ ধুইয়া ফেল (প্ররীত ২২:১৬)। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ)
অননীয়ের এই কথা দ্বারা প্রমানিত হয় যে শৌলের-তখনও পাপ ছিল যা ধুয়ে ফেলতে হতো। তার আত্মা তখনও দাগযুক্ত ছিল! তার পোশাকগুলো তখনও মেষশাবকের রক্তে সাদা হয়ে ওঠেনি! সে তখনও প্রস্তুত ছিল না স্বর্গীয় সিংহাসনের চারপাশে ঈশ্বর ও আমাদের প্রভু যীশু খ্রিষ্টের সামনে চলাফেরা করার জন্য! কিন্তু সে খুব শিগগিরই প্রস্তুত হবে, কারণ সে স্বর্গীয় আদেশ মান্য করেছিল; সে 'উঠে দাঁড়াল এবং বাপ্তিস্ম গ্রহণ করল' (প্রেরিত ৯:১৮)।**
6
7
বহু বছর পর, এই একই শৌল, যাকে পরবর্তীতে পৌল বলা হয়, সে রোমে একটি চিঠি লেখেন এবং জীবন্তভাবে বর্ণনা করেন কিভাবে যীশুর রক্তের মাধ্যমে পাপ ধুয়ে ফেলা যায় — যার ফলে একজন মানুষ খ্রীষ্টের মধ্যে প্রবেশ করে। তিনি লিখেন-
আমরা ত পাপের সম্বন্ধে মরিয়াছি, আমরা কি প্রকারে আবার পাপে জীবন যাপন করিব?
অথবা তোমরা কি জান না যে, আমরা যত লোক খ্রীষ্ট যীশুর উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হইয়াছি, সকলে তাঁহার মৃত্যুর উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হইয়াছি? 4 অতএব আমরা তাঁহার মৃত্যুর উদ্দেশে বাপ্তিস্ম দ্বারা তাঁহার সহিত সমাধিপ্রাপ্ত হইয়াছি; যেন, খ্রীষ্ট যেমন পিতার মহিমা দ্বারা মৃতগণের মধ্য হইতে উত্থাপিত হইলেন, তেমনি আমরাও জীবনের নূতনত্বে চলি। 5 কেননা যখন আমরা তাঁহার মৃত্যুর সাদৃশ্যে তাঁহার সহিত একীভূত হইয়াছি, তখন অবশ্য পুনরুত্থানের সাদৃশ্যেও হইব। 6 আমরা ত ইহা জানি যে, আমাদের পুরাতন মনুষ্য তাঁহার সহিত ক্রুশারোপিত হইয়াছে, যেন পাপদেহ শক্তিহীন হয়, যাহাতে আমরা পাপের দাস আর না থাকি। 7 কেননা যে মরিয়াছে, সে পাপ হইতে ধার্মিক গণিত হইয়াছে। (প্রেরীত ৬:২-৭)।
মৃত্যু, সমাধি এবং পুনরুত্থানের প্রতি নির্দেশগুলোর প্রতি লক্ষ্য করুন। তিনি বলেন, আমরা পাপের সম্বন্ধে মরিয়াছি ( পদ ২)। সকলে তাঁহার মৃত্যুর উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হইয়াছি? (পদ ৩)
বাপ্তিস্ম দ্বারা তাঁহার সহিত সমাধিপ্রাপ্ত হইয়াছি; (পদ ৪)। খ্রীষ্ট যেমন পিতার মহিমা দ্বারা মৃতগণের মধ্য হইতে উত্থাপিত হইলেন, তেমনি আমরাও জীবনের নূতনত্বে চলি। (পদ ৪)।
এবার, পৌল এই মহান শিক্ষাটিকে একত্রিত করে এক মনোমুগ্ধকর উপসংহারে উপনীত হন ১৭ নম্বর পদে: তিনি বলেন-
কিন্তু ঈশ্বরের ধন্যবাদ হউক যে, তোমরা পাপের দাস ছিলে বটে, পরন্তু শিক্ষার যে আদর্শে সমর্পিত হইয়াছ, অন্তঃকরণের সহিত সেই আদর্শের আজ্ঞাবহ হইয়াছ;.
পৌল এখানে একটি আনুগত্য প্রকাশের কথা বলেন.. যেটি হল বাপ্তিস্মের একটি নমুনা আর সেই নমুনাটি হল প্রভুর মৃত্যু, সমাধি এবং পুনরুত্থান (পদ ২-৬)।
তারা কীভাবে সেই আদর্শ (pattern) অনুসরণ করেছিল?
প্রথমে, পৌল বলেন, পাপের সমন্ধে মৃত হওয়ার মাধ্যমে (পদ ২)। তারপর তাঁর সঙ্গে সমাধিস্থ হওয়া…
8
9
“বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে সমাধিস্থ হওয়া” (পদ ৪), এবং শেষে, “নতুন জীবনে চলার জন্য” পুনরুত্থিত হওয়া (পদ ৪)।
প্রেরীত পৌল বলেন, যখন আমরা সেই আদর্শের আজ্ঞা পালন করি, তখন “পাপ থেকে মুক্তি পাই” ( যেটা ১৭–১৮, পদে বলা হয়েছে)।
কিন্তু যখন আমরা আজ্ঞা পালন করি, তখন আমাদের পাপ ধুয়ে ফেলা হয়। যখন আমরা বাপ্তিস্ম গ্রহণ করি, পৌল বলেন, “আমরা যত লোক খ্রীষ্ট যীশুর উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হইয়াছি, সকলে তাঁহার মৃত্যুর উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হইয়াছি” (পদ ৩)।
খ্রীষ্টের মধ্যেই “ মুক্তি” ।
নিশ্চয়ই, আমরা আমাদের প্রভুর বাইরে থেকে মুক্তি পেতে পারি না।
তাহলে, আমরা কিভাবে খ্রিষ্টের মধ্যে প্রবেশ করি?
পৌল রোমীয় ৬:৩-এ বলেন, আমরা “খ্রীষ্ট যীশুর উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হইয়াছি।”
তিনি গালাতীয়দেরকেও একই শিক্ষা দেন:
“তোমরা যত লোক খ্রীষ্টের উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হইয়াছ, সকলে খ্রীষ্টকে পরিধান করিয়াছ।” (গালাতীয় ৩:২৭, )।
আমরা আমাদের যাত্রা শুরু করেছিলাম একটি অনুসন্ধানের মাধ্যমে, এবং এখন যা খুঁজে পেয়েছি তা হলো:
প্রভু খ্রীষ্টের মধ্যে প্রবেশ করার জন্য আর কোনো পথ দেননি, এবং তাঁর মুক্তিদায়ক রক্তে পৌঁছানোর আর কোনো উপায় দেননি — শুধুমাত্র খ্রীষ্টে বাপ্তিস্ম গ্রহণের মাধ্যমে ছাড়া।
আমাদের দায়িত্ব হলো যীশু খ্রীষ্টের দিকে ফেরা শাস্ত্র বলছে-
“ আর এখন কেন বিলম্ব করিতেছ? উঠ, তাঁহার নামে ডাকিয়া বাপ্তাইজিত হও, ও তোমার পাপ ধুইয়া ফেল।” (প্রেরিত ২২:১৬)
আপনারা হয়ত কেউ কেউ ভাবছেন, “আমি ত বাপ্তিস্ম নিয়ে একটি Denomination মন্ডলীতে যুক্ত আছি তাহলে আবার বাপ্তিস্ম নিব কিভাবে?”
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
যদিও অনেক মতবাদী গোষ্ঠী (denominations) জলে ডুবিয়ে বাপ্তিস্ম দেয় বা কিন্তু পাপ ক্ষমার জন্য বাপ্তিস্মে বিশ্বাস করে না।
অধিকাংশ মন্ডলী বাপ্তিস্মকে শুধু একটি চিহ্ন বা প্রতীক হিসেবে দেখে — অর্থাৎ, তারা দাবি করে যে একজন মানুষ তখনই উদ্ধার পায়, যখন সে সিদ্ধান্ত নেয় যীশুকে ব্যক্তিগত ত্রাণকর্তা হিসেবে গ্রহণ করার।
এরপর সে তথাকথিত “পাপীর প্রার্থনা” (sinner’s prayer) করে, এবং পরে, এক সময়ে তাকে বাপ্তিস্ম দেওয়া হয় — যা মুক্তির একটি প্রতীক মাত্র।
এমন মনুষ্যসৃষ্ট মন্ডলীগুলো শিক্ষা দেয় যে “পাপীর প্রার্থনা”-ই হলো মুক্তির মুহূর্ত, এবং পরে চিহ্ন হিসেবে বাপ্তিস্ম দেওয়া হয়।
তাই তারা পাপের ক্ষমার জন্য (প্রেরিত ২:৩৮) -এর মতে বাপ্তিস্ম দেয় না,
10
যা একটি গুরুতর ভুল, কারণ এটি প্রেরিত ২:৩৮; ও প্রেরীত ২২:১৬ এবং রোমীয় ৬-এর মত বাপ্তিস্ম নয়। সুতরাং তাদের দেওয়া বাপ্তিস্ম বাইবেলীয় বাপ্তিস্মের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
যদি আপনি এই ধরনের এক বাপ্তিস্মের অধীনে বাপ্তিস্মিত হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি কী করবেন?
আপনার উচিত প্রেরিত ১৯-এর লোকেরা যা করেছিল, সেটাই করা। সেখানে পৌল
কিছু লোককে খুঁজে পান, যারা যোহনের বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিল।
তারা শাস্ত্রীয় বাপ্তিস্ম সম্পর্কে কিছুই জানত না, (প্রেরীত ১৯:১-৩)
তাই পৌল সঙ্গে সঙ্গে তাদের যীশুর নামে বাপ্তিস্ম সম্পর্কে শিক্ষা দেন।
তারপর, শাস্ত্রগুলো বলে,
“এই কথা শুনিয়া তাহারা প্রভু যীশুর নামে বাপ্তাইজিত হইল।” (প্রেরিত ১৯:৫)।
লক্ষ্য করুন যে বাপ্তিস্ম প্রদান করা হয়েছিল ততক্ষণাৎ।
একমাত্র বাপ্তিস্ম যা “প্রভু যীশুর নামে” (অর্থাৎ, তাঁর কর্তৃত্বে) দেওয়া হয়, তা হলো “পাপের ক্ষমার জন্য যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তিস্ম”।
প্রভু অন্য কোনো বাপ্তিস্মকে অনুমোদন করেন না।
এটি হলো ইফিষীয় ৪:৫-এ বলে “একটি মাত্র বাপ্তিস্ম”।
বাপ্তিস্মের প্রয়োগে ব্যাপক ভুলের কারণে, অনেক মানুষ কখনোই “সুসংবাদের আজ্ঞা পালন” করেনি এবং সেই জন্য তারা “খ্রীষ্টের মধ্যে” নেই, যদিও তারা অনেক বছর ধরে তাদের ডিনোমিনেশনাল মন্ডলীতে যেত যারা ভেবেছিল তারা প্রভুর সাথে যুক্ত।
এটি শয়তানের একটি সূক্ষ্ম পরিকল্পনা, যা মানুষকে যীশু খ্রীষ্টের আত্মা-পরিষ্কারকারী রক্ত থেকে দূরে রাখে।
এটি ভয়ংকর, বিশেষ করে যখন আমরা ২ থিষলনিকীয় ১:৭-৮-এ পবিত্র আত্মার সতর্কতার কথা ভাবি, যেখানে তিনি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন যে যীশু একদিন প্রত্যাবর্তন করবেন এবং “তাদের প্রতি প্রতিশোধ নিবেন যারা ঈশ্বরকে জানে না এবং আমাদের প্রভু যীশুর সুসংবাদে আজ্ঞাবহ হয়না…” ।
কতই না দুঃখজনক একটি দিন হবে, যখন মানুষ ভেবেছিল তারা পাপ থেকে মুক্তি পেয়েছে, কিন্তু আসলে তা হয়নি!
তারা কখনো মুক্তি পায়নি কেন? কারণ তারা কখনো যীশুর রক্তের কাছে পৌঁছায়নি।
বাইবেল বারবার শিক্ষা দেয় যে পাপের ক্ষমার জন্য বাপ্তিস্ম গ্রহণ না করলে
আমরা আমাদের পাপে জীবন যাপন চালিয়ে যাই। লক্ষ্য করুন,
11
শাস্ত্রীয়ভাবে বাপ্তিস্ম গ্রহণ না করলে আমরা—
• প্রেরিত ২:৩৮-এর মত পাপের ক্ষমা পাই না ।
• গালাতীয় ৩:২৭ -এর মত খ্রীষ্টে প্রবেশ করিনা।
• প্রেরিত ২:৩৮- এর মত পবিত্র আত্মার দান পাইনা ।
• প্রেরিত ২২:১৬-এর মত আমাদের পাপ ধুয়ে ফেলা হয়না ।
• গালাতীয় ৩:২৭-এর মত খ্রীষ্টকে পরিধান করিনা।
• মার্ক ১৬:১৬-তে দেওয়া আমাদের প্রভুর মুক্তির পথ অনুস্বরণ করিনা।
• যোহন ৩:৩-৫ -এর মত “জল ও আত্মা দ্বারা” নতুন জন্মগ্রহণ করিনা।
• আমরা প্রেরিত ২:৩৮-এর আজ্ঞা পালন করিনা।
• আমরা বাইবেলের উদাহরণগুলো অনুসরণ করিনা, যেখানে বলা হয়েছে তারা তৎক্ষণাৎ বাপ্তিস্ম গ্রহণের মাধ্যমে খ্রীষ্টিয়ান হিসেবে পরিণত হয়েছিল; যেমন ফিলিপীয় কারাগারের জেলরক্ষক এবং থুয়াতীরা নগরের লুদিয়া নাম্নী এক মহিলা (প্রেরিত ১৬), শৌল (প্রেরিত ৯ ও ২২ অধ্যায়), পঞ্চাশত্তমীর দিনের যিহুদীরা (প্রেরিত ২:৩৭-৪১), কর্নেলীয় (প্রেরিত ১০:৪৮) এবং নপুংসক (প্রেরিত ৮:৩৭)।
• আমরা ১পিতর ৩:২১; মার্ক ১৬:১৬ মত উদ্ধার পাইনি। তাই
আজ এই মুহুর্ত্ত পর্যন্ত যদি আপনি এখনো শাস্ত্রীয়ভাবে বাপ্তিস্ম গ্রহণ না করে থাকেন — অর্থাৎ, আপনার পাপের ক্ষমার জন্য যীশু খ্রীষ্টের মধ্যে বাপ্তিস্ম না নিয়ে থাকেন —
অনুগ্রহ করে এখনই সিদ্ধান্ত নিন সেই “শিক্ষার আদর্শ” (রোমীয় ৬:১৭) অনুসরণ করে আজ্ঞা পালন করুন!
নিশ্চয়ই আপনি যীশু খ্রীষ্টের প্রতি বিশ্বাস রাখেন! (প্রেরিত ১৬:৩১)
আপনি কি সত্তিই মন থেকে যীশুর সেই মন পরিবর্তণের আজ্ঞা অনুযায়ী পাপ থেকে ফিরে আসতে প্রস্তুত? (লূক ১৩:৩) —
হোক তা জগতের মত জীবন যাপন করা, কিংবা অজান্তে ভুলভাবে প্রভুর সেবা করা?
আপনি কি মন থেকে ইচ্ছুক যীশুর মিষ্টি পদটি স্বীকার করতে?—”আমি বিশ্বাস করিতেছি যে, যীশু খ্রীষ্ট হলেন ঈশ্বরের পুত্র” —ঠিক যেমনটি ইথিয়পীয় কান্দাকি রাণীর সমস্ত ধনকোষের অধ্যক্ষ নপুংসক করেছিলেন? (প্রেরিত ৮:৩৬ এর ফুটনোট দেখুন)।
তাহলে এখন সেই শেষ পদক্ষেপটি নিন —
খ্রীষ্টের মধ্যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করুন,
সেই জলপূর্ণ কবরের মধ্যে সমাধিস্থ হোন,
যেখানে আপনি যীশু খ্রীষ্টের রক্তের সঙ্গে সংস্পর্শে আসেন,
এবং আপনার সব পাপ ধুয়ে ফেলুন!
কী আনন্দের দিনই না হবে সেই দিন, যেদিন আপনি যীশু খ্রীষ্টের মধ্যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করবেন এবং তাঁর আশীর্বাদপুষ্ট ডাকের মধ্য দিয়ে প্রভু আপনাকে তাঁর নিজের মন্ডীতে যুক্ত করবেন! (প্রেরিত ২:৪৭)
আর কত মহিমাময় দিনই না হবে সেটা, যখন আমরা জীবনের পথের শেষ প্রান্তে পৌঁছাব, এবং ঈশ্বরের সিংহাসনের চারপাশে পবিত্রগণের সঙ্গে মিলিত হতে পারব।
আমাদের বিশ্বস্ততার উপর ভিত্তি করে, আমরা স্বর্গীয় রাজ্যে প্রচুর করুণার সঙ্গে প্রবেশাধিকার লাভ করব।
12
কারণ আমরা পুরস্কার লাভ করব, কারণ আমাদের পোশাকসমূহ মেষশিশুর রক্তে ধুয়ে তুষারের মতো সাদা হয়েছে!
আমরা এলিশা হফম্যানের সেই মহান স্ত্রোত্র-গীত "Are You Washed in the Blood?"—এর কথা স্মরণ করি এবং তাঁর সেই হৃদয়স্পর্শী আহ্বান, যা আমাদের সবাইকে গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করতে হবে!
“পাপময় পোশাক ফেলো দূরে,
আর মেষশিশুর রক্তে ধুয়ে নাও;
অশুচি প্রাণের জন্য আছে এক ঝরনা,
ওহ! মেষশিশুর রক্তে ধুয়ে নাও!”
এই গানের মূল বার্তাটি হলো: পাপ থেকে মুক্তির একমাত্র পথ হলো যীশু খ্রীস্টের রক্তে ধোয়া—যেটি বাইবেল অনুসারে "রক্তসেচন ব্যতিরেকে পাপমোচন হয় না" (ইব্রীয় ৯:২২)।
আমেন!
প্রভু আপনাকে আশীর্বাদ করুন যেন আপনি আজই সেই পাপময় পোশাকগুলো ত্যাগ করতে পারেন!
আপনি কি এখনই সেই সিদ্ধান্ত নেবেন?
আপনি কি এখনই যীশু খ্রীস্টে বাপ্তাইজিত হয়ে, পাপমুক্ত জীবনের পথে পা রাখতে ইচ্ছুক?
বাইবেল স্পষ্টভাবে শিক্ষা দেয় যে,
“ যে বিশ্বাস করে ও বাপ্তাইজিত হয়, সে পরিত্রাণ পাইবে; ” (মার্ক ১৬:১৬)।
এখনই সময়—
আজই সেই দিন, যেদিন আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যেন পাপ থেকে মুখ ফিরিয়ে যীশুর রক্তে ধুয়ে এক নতুন জীবন শুরু করতে পারেন (প্রেরিত ২২:১৬)।
দয়া করে দেরি করবেন না।
যদি আপনি চান, আমি আপনার জন্য একটি সংক্ষিপ্ত আত্ম-পরীক্ষার প্রশ্ন ও প্রার্থনা প্রস্তুত করতে পারি, যা আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।
আপনি কি সেটি চান?
আপনি কি এখনই “যীশু খ্রিষ্টের নামে, পাপের ক্ষমার জন্য” বাপ্তিস্ম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেবেন?
মেষশাবকের রক্ত এটি আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যায় একটি প্রাচীন বাইবেলীয় সত্যের কাছে: একজন পাপী যীশুর রক্তে পৌঁছায় (অর্থাৎ তার পাপ ধুয়ে যায়) যখন সে যীশু খ্রীস্টে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করে — সম্পূর্ণ ডুবে। কিন্তু কোনোভাবে বেশিরভাগ ধর্মীয় গোষ্ঠী এই মহান সত্যটি হারিয়ে ফেলেছে। মূলত ১৬শ শতকের সংস্কার আন্দোলনের প্রভাবে মানুষ শিক্ষা দিতে শুরু করে যে, উদ্ধারের ঘটনা বাপ্তিস্মের আগে ঘটে এবং বাপ্তিস্ম আর “পাপমুক্তির জন্য” নয়। আমাদের আত্মার পরিত্রাণের প্রশ্ন জড়িত থাকায়, আমরা আবার বাপ্তিস্মের দিকে তাকাই এবং... মেষশাবকের রক্তে।